কষ্ট করে এখানে আসার জন্যে অনেক ধন্যবাদ জানাইতাসি।
প্রথম কথা হইলো এইডা আমার পার্সোনাল ব্লগ। তাই এনে আমি আমার ইচ্ছা মত আঞ্চলিক ভাষায় বা সহি শুদ্ধ ভাষায় যাই লিখিনা কেন! পুরোটা আমার জীবনের একটা অমূল্যবান কাহিনী।
সর্বপ্রথম মহান আল্লাহতালারে অনেক ধন্যবাদ যে তিনি আমায় এতদিন বাচিয়ে রাখছেন। এতদিন, মানে ২০ বছরেরও বেশি। এই ২০ বছরে আমি আমার জীবনে অনেক কিছু দেখছি, করছি, খাইছি এবং শুনছি।
আজকে আমার 20 তম জন্মদিন আর আমার কখনো কোনো জন্মদিন স্পেশাল হয় নাই কিন্তু জানেনা আজকের আমার এই 20 তম জন্মদিন কিভাবে স্পেশাল হয়ে গেল ।
গত কিছু দিন আগেই থাইকাই রিদয় বলতেছিলো কোথাও ঘুড়তে যাওয়ার কথা। আমিও কইলাম চল সীতাকুন্ড যাই। সাথে সাথে রাজি হয়ে গেলো হেই। পরে প্ল্যান হইলো আমি রিদয় আর এনাইম্মা (এনামুল) যামু।
তো, প্লান হইতেছেই যাওয়া আর হইতেছে না। অগাষ্ট ০২, ২০২২! আমার জন্মদিন। নরমালি আমার সেদিনের জন্য কোনো প্লান ছিলো না। জাস্ট দিনটা একটু স্পেশাল ছিলো আরকি। হঠাৎ সকালে শুনলাম আমাদের আগের বাড়ির এক জেঠি মা মারা গেছে সেখানে তারে দেখতে গেলাম দেখে জানাযা নামাজে গিয়ে রিদয় বললো ট্যুরের কথা, আমি তো এক পায়ে দাড়িয়ে আছি যাওয়ার জন্যে। এখন এনামুল গেলেই হলো। ভাবছিলাম আমরা ৩জন সীতাকুন্ড গিয়ে সকালে ছবি ছাড়মু আর সবাই চমকে যাইবো। কিন্তু বিকালে এনাম কইলো হেই নাকি যাইবো না :) । মানে, মেজাজ টা এমন খারাপ হইছিলো না এডা শুইনা! পরে দেখলাম হের পায়ে সমস্যা। বিশাল সমস্যা ছিলো তাই যাইতে পারবো না।
পরে রিদয় বললো আমাদের সাথের নাহিদ আর রাকিবরে। নাহিদ আমার সাথেই পড়তো, আর রাকিব আমার ছোট ভাই। পরে সন্ধায় ঠিক হলো আমরা যাচ্ছি! আমি, রিদয়, নাহিদ, আর রাকিব। রাতে বাড়ি থেকে বের হলাম ট্রেনের জন্য। যদিও ট্রেন রাত ১২:৩০ মিনিটে আসবে ভৈরবে। আমরা ভৈরব থেকে যাবো । যাওয়ার আগে আমাদের সাথে ভাতিজা জুবায়েদও যুক্ত হলো। এবার ৫ জন মিলে রওনা দিলাম ভৈরব স্টেশনের উদ্দেশ্য, সেখান থেকেই রাতে ট্রেনে উঠবো।
এখন ট্রেনের জন্য অপেক্ষা ট্রেন আসতে আরো ১ ঘন্টার মত বাকি আছে মেবি।
এই ফাকে স্টেশনে আমরা কিছু ফিল্টার মুক্ত ছবি তুললাম।
ট্রেন আসলো আমরা ট্রেনে কেবিন নিলাম। আমাদের সাথে কেবিন শেয়ার করার জন্যে আরো ৪ জন উঠলো। আমরা রাতে ট্রেনে যা মজা করসি! তা বলে আর লিখে কোনোদিন বুঝানো যাবে না। যেতে যেতে সকাল ৬টা বাজবে। রাকিব ওর ছোট একটা গান বাজানোর স্পিকার নিয়ে আসলো সেটায় অনেক পার্টিগান বাজানো হলো রাত ৩ টা পর্যন্ত। কেও আর ঘুমায় না! পরে আমি লাগাইলাম কিছু বাংলা ব্যান্ড এর গান আর ১০ মিনিটেই সব ঘুমিয়ে গেছে 😂। ঘুমানোটা অনেক দরকার ছিলো কারন কাল অনেক পরিশ্রম হবে। সবাই ঘুমিয়ে গেছে আর আমিও।
অবশেষে সকাল হলো আর আমরা চট্টগ্রামে চলে গেলাম। ট্রেন আরো ৩০ মিনিটের মত চলবে। আর ঘুম থেকে উঠেই যা দেখলাম তা হলোঃ পাহাড়ে মেঘ আটকে আছে! দৃশ্যটা দেখে নিজের সব কষ্ট কিছু সময়ের জন্য ভুলে গেলাম। সেখানের কিছু ভিডিও ছিলো যা ডিলিট হয়েগেছে :(
অবশেষে সীতাকুন্ড রেলওয়ে স্টেশনে নামলাম।
এখন সকালের খাওয়ার টাইম। আর এখান থেকেই শুরু হয় নাটক :) এক এক জন তাদের গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা বলবে নাকি খাবে তারা নিজেই জানে না :) আমার তো প্রচুর রাগ উঠতেছিলো তবে কিছু বলতে পারি নাই ভদ্র সমাজে ছিলাম বলে তাই। অবশেষে খাওয়া হইলো। আর খেয়েই রওনা দিলাম চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যাওয়ার জন্য।
পাহাড়ের প্রতি আমার অন্যরকম ভালোবাসা কাজ করে। আমি পাহাড়ে অনেক ঘুড়তে যাই।
সকল পাহাড়ের উচ্চতাই তোমার সীমার মধ্যেই যদি তুমি পাহাড়ে চড়া অব্যাহত রাখো।
— ব্যারি ফিনলে
জানি না কতদিন বাচবো আর আমার কোনো সন্তান হবে কিনা। আমার কোনো সন্তান হলে তাকে নিয়ে এখানে অবশ্যই ঘুড়তে আসবো।
এই পাহাড়কে বিদায় জানাতে বাজলো দুপুর ১২টা। খাওয়ার সময় হয়ে গেছে আর এখন গোসলও করতে হবে। আর পাহাড়ে গিয়ে গোসল করার জন্য ঝর্নার চেয়ে ভালো উপায় আর কি হতে পারে? সাথে সাথে চলে গেলাম ইকো পার্কে। ভাইরে ভাই, এক পাহাড় চড়ে আরেক পাহারের গহীন জঙ্গলে গেলাম গোসল করার জন্য। দিনের আর নিজের ১২টা সমানে বেজে গেছে! 😥
যতই পুকুর, সুইমিং পুল, নদী আর বিলে গোসল করেন না ক্যান, ঝর্নায় গোসলের মজাই আলাদা
এখানে গোসল শেষ করেই এমন এক জায়গায় গেসিনা!😌 একের বারে মন পরিষ্কার হয়েগেছে।
গুলিয়াখালি সী বিচ!!! এত সুন্দর এত সুন্দর এত সুন্দর! স্পিকারে বাংলা ব্যান্ড এর গান সাথে বার্মিজ আচার আর কফি! আমি আবারো যাবো সেখানে।
এ বিচে সন্ধা পর্যন্ত সময় কাটাই আর জোয়ার ভাটা দেখি! যা একটা ভালো লাগা কাজ করেছেনা মনে....
জোয়ার ভাটার চক্রে দেখি জীবনের পরিবর্তন
স্মৃতির সাথে বাস্তবতার পাঁচ-মেশালি আবর্তন,
সূর্যঘড়ির চক্রে এমন সমুদ্রবিলাস
শান্ত করে মনকে ভীষণ, সুখের অভিলাষ।
-----------------------
এই ট্যুরে সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হলো, আমার ভালো কোনো ফোন ছিলো না। একটা ফোন যার কোনো ভালো ক্যামেরা নাই। :)
-----------------------
সন্ধার সময় পথ দিলাম চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের দিকে। এখন বাড়ি আসার পালা।
একটা ট্যুর/ভ্রমন/ঘুড়তে যাওয়া যে যাই বলে, মন হালকা করে দেয় ভাই। অনেক ভালো লাগে । রিলিফ জিনিসটা জীবনে অনেক দরকার। মেন্টাল পিস আর শারীরিক পিস ২টাই জীবনে না থাকলে আপনার জাহান্নাম দুনিয়াতেই। সময় পেলেই ঘুড়তে যান, পারলে বন্ধুদের নিয়ে যান অনেক মজা হবে। অনেক মজা করেছি সেদিন। অনেক মজা করেছি। ২০২২ সালের অগাস্ট মাসের এই ট্যুর আমি কোনোদিন ভুলবো না। আল্লাহ আমাকে তৌফিক দিলে আমি সারা পৃথীবি ঘুড়বো।
সফর আর কবরে কখনো ভুল করতে নেই।
আজকের মত এখানেই শেষ করলাম।
My name is Ripon and I live, I don't survive.
Comments
Post a Comment